প্রকাশিত: Thu, Jun 20, 2024 10:58 AM
আপডেট: Sun, Jun 22, 2025 4:18 PM

[১]সিলেটে পানিবন্দি সাড়ে ৮ লাখ মানুষ [২]সবকটি নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর

আশরাফ চৌধুরী রাজু, সিলেট : [৩] ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিপাতে প্রতিনিয়ত প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ঘর-বাড়ি ছেড়ে অনেক মানুষ নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিচ্ছেন। জেলায় সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

[৪] সিলেটের সবকটি নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

[৫] সিলেটে আগামী তিন দিন ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

[৬] সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, টানা বৃষ্টির ফলে সুরমা নদীর পানি ছাড়াও নালা উপচে প্রবেশ করছে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায়। তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। ঘর থেকে বাইরে বের হতে গিয়ে পড়তে হচ্ছে নানান সমস্যায়। সিলেট মহানগরীতে ৫০ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি। আর জেলার ১৩টি উপজেলার ৭ লাখ ২৫ হাজার ৯৩৭ জন পানি বন্দি রয়েছেন।

[৭] পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য মতে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমার পানি সিলেট পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার, অমলসীদ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি ৪৭ সেন্টিমিটার ও একই নদীর ফেঞ্চুগঞ্জে ৮৮ সেন্টিমিটার নদীর পানি ৩৩ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপরে। এছাড়াও সারি গোয়াইনের পানি ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

[৮] মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৭৬ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানান সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো.সজীব হোসাইন।

[৯] জানা যায়, গত ২৭ মে ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল। এতে জেলার অন্তত সাড়ে ৭ লাখ মানুষ আক্রান্ত হন। ৮ জুনের পর থেকে বন্যা পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসে। তবে ঈদের আগের দিন রোববার  মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া সোমবার টানা ভারি বৃষ্টিতে আবার সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। 

[১০] সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহর, বরইকান্দি, যতরপুর, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, রায়নগর, সোবহানীঘাট, কালিঘাট, কামালগড়, মাছিমপুর, তালতলা, জামতলা, কাজিরবাজার, মাদিনা মার্কেট, আখালিয়া ও মেজরটিলাসহ অধিকাংশ এলাকা বন্যাকবলিত।

[১১] মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, সিলেট মহানগরীসহ ১৩টি উপজেলায় ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৭জন মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। এরমধ্যে সিলেট মহানগরীর ৪২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২১টি ওয়ার্ডের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। ৬২৭ টি আশ্রয় কেন্দ্রের মধ্যে আশ্রয় নিয়েছেন ১৭ হাজার২৮৫জন। ১৩টি উপজেলায় ১৩২৩টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, গোলাপগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ,জকিগঞ্জ, বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর উপজেলা। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী